![]() |
পাকুরতলে সোনালি দুপুর
আমার কৈশোরের দিনগুলোর বিশাল একটা অংশ এখানেই লুকিয়ে আছে। শীতের সকালে খালি পাায়ে ছুটে আসতাম এই পাকুরতলীতে। এসে দেখতাম, পাখিরা কিচিরমিচির রবে পাকুরের ঘুম ভেঙে দিয়েছে। ততক্ষণে পূর্বাকাশ রক্তিম হয়ে উঠেছে। শিশিরভেজা সবুজ ঘাসে সোনালী রোদ হেঁসে উঠেছে। গ্রীষ্মের অলস দুপুরে মা যখন ঘুমোতে বলতো— মায়ের চোখ ফাঁকি দিয়ে ছুটে আসতাম পাকুরতলীতে। পাশ্বের গ্রামের রাখাল ছেলেদের ঘুড়ি উড়া, লুডু, পাইতা আরও নাম না জানা নানান খেলা দেখতাম। দুপুর গড়িয়ে বিকেল কাটিয়ে সবাই যখন বাড়ি ফিরতো, পাকুরতলীতে আনমনা হয়ে কি যেন ভাবতাম। দেখতাম, দূরের পল্লি থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি উড়ে আসছে এই পাকুর গাছে। কিচিরমিচির রবে মাতিয়ে তুলতো পাকুর গাছটা। যেন সারাদিনের কর্মবিবরণী বলে দিচ্ছে পাকুরকে। গোধূলিলগ্নে পূর্বাকাশ যখন রক্তিম হয়ে আসতো, বিস্ময়ভরা চোখে তাকিয়ে দেখতাম— সূর্যের লুকোচুরি। চারদিকে যখন অন্ধকার হয়ে আসতো, খানিক দূরে তাকিয়ে দেখতাম— কে যেন দাঁড়িয়ে আছে। কাছে গিয়ে দেখতাম, সে আমার 'মা'। আমাকেই খুঁজেফিরে এখানেই এসেছে। আজ এই অনুভূতীগুলো এই ইট-পাথরের চার দেয়ালের মাঝে বন্দী হয়ে আছে!
No comments:
Post a Comment