My Blog List

Wednesday, April 2, 2025

চড়ুইভাতি

 



ফেলে আসা কৈশোরের দিনগুলোতে...

তখন আমি মাদারীপুরে অধ্যায়নরত ছিলাম। ইংরেজি ২০১৭/১৮ খ্রিস্টাব্দ হবে। 

প্রায় ছ'সাতমাস পর গ্রামে গেলাম। আমাকে পেয়ে সজীব, ফারুক, নাঈম আর মীম উৎফুল্ল হয়ে উঠেছিলো। খবর পেয়ে— তানজীমুল বাড়ি থেকে ছুটে এলো। নিতাই থেকে ছোট ফুপি এলো। আমাকে পেয়ে রিয়াদ ও হৃদয়ও খুব খুশি হলো। 


সেদিন পড়ন্ত বিকেলে নাঈম, ফারুক ও সজীব সিদ্ধান্ত নিলো- আমাকে নিয়ে আজরাতে চড়ুইভাতি করবে। 

রিয়াদ, হৃদয় আর তানজীমুল থাকায় এবারের চড়ুইভাতি ভিন্নভাবে একটু বড় পরিকল্পনায় হবে! 

সজীব চাল দেবে, আমি মশলা ও তেল, নাইম রশুন আর আদা, ফারুক হলুদ, মরিচ ও লবণ নিয়ে আসবে। সাথে প্রত্যেকে ২০ টাকা করে দেবো; যা দিয়ে বাজার থেকে মাংস কিনে আনবো। জায়গা ঠিক হলো—নাঈমদের পুকুরপাড়ের খেজুর গাছের আড়ালে। সেখানে কেউ দেখতে পাবে না। যাবেও না। প্ল্যান মতো, সূর্যের আলোতেই সবাই মিলে সেখানকার আশপাশের ঝোপঝাড় পরিষ্কার করলাম। 


প্রস্তুতির ঝড়ো হাওয়া...

সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসছে।

পরিকল্পনা মতো সবাই বাড়ি থেকে লুকিয়ে-চুরিয়ে— চাল-ডাল, পিয়াজ, মরিচ, আদা-রশুন, ঘর বানানোর কাপড় ইত্যাদি নিয়ে এসে, পুকুরপাড়ে লুকিয়ে রাখলাম। কিন্তু মীম বিষন্ন মনে এসে বললো, তাকে রাত্রী বেলায় বাড়ি থেকে বের হতে দেবে না। কারো সাথে থাকতেও পারবে না। চড়ুইভাতির কথা শুনলে, তার বাবা-মা ভীষণ রাগ করবে। কী করা যায়...

ভাবতে-ভাবতে ফারুক ও সজীব তাকে আইডিয়া দিয়ে বললো, তুই তোর মা'কে বলবি— আজ রাতে আযীয আংকেলের সাথে থাকবি। কিছু বললে বলবি, আংকেল থাকতে বলেছে। ব্যাস!


মাগরীবের পর...

তালপুকুরের মেঠোপথ ধরে সবাই মিলে হাজারীহাট গেলাম মুরগী কিনতে। মুরগীর ব্যাগ নিয়ে কী-যে আনন্দে ফিরছিলাম! মনে হচ্ছিল, আমরা ৮ জন দিগ্বিদিক জয় করে ফিরতেছি! পথটা যেন দ্রুতই ফুরিয়ে গেলো।

মুরগীর ব্যাগসহ পুকুরপাড়ে চলে এলাম। সিদ্ধান্ত হলো, যার-যার মতো করে ম্যানেজ করে, রাত সাড়ে দশটায় পুলেরপাড়ে একত্রিত হবো। 


চুড়ান্ত অভিযান...

রাত সাড়ে বারোটা। ফারুক, নাঈম আর সজীব গেলো লাকড়ি জোগাড় করতে। রনি আর তানজীমুল পা টিপেটিপে গেলো রান্নাঘরে, রান্নার পাতিল আনতে। মীম আর রিয়াদ গেলো পানি আনতে। আমি হৃদয়কে নিয়ে গেলাম পুকুরপাড়ে রান্নার প্রণালী তৈরি করতে...


ভূতের ভয়, অন্ধকারে ভয়ের পেছনে যে গল্প ছিল

আমি চাল-ডাল ও পিয়াজ-মরিচগুলো প্রস্তুত করছি। হৃদয় পাশে বসে আছে। এমন সময় সে বাঁশঝাড়ের দিকে তাকিয়ে চিৎকার করে ওঠে এবং আমাকে ঝাপটে ধরে। আমি ওর মুখ চেপেধরি। ও চিৎকার দিয়ে বলে, ভাইয়া ওটা কি! ওটা কি!! আমিও ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে উঠি। ভয়ে সেদিকে তাকানোর সাহস পাই না। আশেপাশে তখন কেউ নেই। গুমোট অন্ধকার। হৃদয় ভয়ে কাঁপছে আর আমার বুকে ওর মুখটা লুকিয়ে রেখেছে। ক্রমশঃ আমার বুক কেঁপে ওঠে। বিভিন্ন জল্পনা-কল্পনা মাথায় ভেষে ওঠে। মনে-মনে নানান দোয়া-দরুদ পড়তে থাকি। হৃদয় কেঁদে ওঠে, বায়না ধরে বাসায় যাবে। আমি শক্ত করে ওর মুখ চেপে ধরি। আর বুঝানোর চেষ্টা করি। ও শক্ত করে আমাকে ঝাপটে ধরে আছে। আমার মনে হচ্ছে, সাদা কাপড় পরিহিত কেউ একজন আমার পিছনে, বিশালাকার দেহ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মাথা ঘোরালেই ঘার মটকে দেবে! আমার গা শিউরে ওঠে। হৃদয়কে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ঠাঁই দাঁড়িয়ে আছি। আমি মাথা তোলার সাহস পাচ্ছি না। 

হটাৎ হৃদয় আবারও চিৎকার করে বলে উঠলো ভাইয়া ওটা কী? ভুত ভুত! আমি ওর মুখ চেপে ধরলাম। ও কেঁদে উঠলো। আমিও তাকে জড়িয়ে ধরে ফুঁপিয়ে উঠলাম। দেখি, পুকুরের ওপাড়ে দু'টি আত্মা বড়বড় লাঠি নিয়ে দৌড়াদৌড়ি করতেছে! আমার গা ঘেমে উঠলো! চিৎকার করতে চেয়েও পারলাম না, মনে হলো- অদৃশ্য একটি হাত আমার কণ্ঠনালী চেপে ধরেছে। হৃদয় একেবারে চুপসে গেছে। আমি আত্মা দু'টোর দিকে তাকাচ্ছি আর কাঁপতেছি। হৃদয় সেদিকে তাকাতেই চিৎকার করে উঠলো! ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে কাঁপতে লাগলো। ওর সাথে আমিও চিৎকার দিয়ে উঠলাম। সাথে সাথেই আত্মা দু'টো দৌড়ে আমাদের কাছে আসলো। এসেই নাঈম বললো, কী হয়েছে ভাইয়া? আমি চমকে গেলাম! বললাম, তোরা! তোরা এখানে ছিলি? ফারুক ফিসফিস করে বললো, ঐদিকে লাকড়ি পেলাম না। তাই এখানে এসেছি। সাথে-সাথে মীম, রিয়াদ, রনি ও সজীবও আসলো। আমি ওদের সবাইকে বিষয়টি খুলে বললাম। ওরা খিলখিল করে হেসে উঠলো। কিন্তু হৃদয় কিছুই বুঝতে পারলো না, কেবল ভয়ে কাঁপতে লাগলো। আর বাসায় যাওয়ার বায়না ধরলো। নাঈম, ফারুক আর সজীব কাপড় দিয়ে চতুর্দিকটা ঘিরে দিলো; যাতে হৃদয় বাহিরের কোনকিছু দেখতে না পায়। মীম, রিয়াদ ও রনি হৃদয়কে তাদের মাঝখানে বসিয়ে নিলো। 

 

রান্নাবান্নায়...

কাপড়ের ঘেরা ছোট্ট ঘরের ভেতর আমরা রান্নাবান্না শুরু করলাম। নাঈম চুলোয় জ্বাল দিচ্ছে। আমি আর ফারুক রান্না করছি। চুলোর সামনে সবাই ছোট্ট হৃদয়কে নিয়ে ফিসফিসিয়ে মজা করছে।

ভাত রান্না করার পর কীভাবে মার গলাতে হবে কেউ বুঝতে পারছিলাম না। ফারুক ঝটপট একটি আইডিয়া বের করলো। দু'টো কলাপাতা লম্বালম্বি দিয়ে ভাতগুলো সেখানে ঢেলে দিলো। চতুর্দিক দিয়ে মারগুলো বেয়ে গেলো; কিন্তু ভাতগুলো ভেজায় থাকলো। 

মাংস রান্না শেষে কলাপাতায় সকলে ভাত তুলে নিলাম। ভেজাভাতে লবন ও ঝালে চড়া মাংসের স্বাদ আজও আমার জিভে লেগে আছে। পুকুরপাড়ে দাঁড়ালে মনের অজান্তেই হেঁসে উঠি। ছুটে যাই ফেলে আসা সেই কৈশোরের দুরন্তপনায়... 


▪️ঢাকা

Sunday, March 9, 2025

চাঁদ-জোসনা-আমি


 জানালার পর্দাটা সরাতেই একমুঠো জোছনা ছিটকে এলো মেঝেতে। পরিচ্ছন্ন আর পরিষ্কার আকাশে জ্বলজ্বল করছে আধখানা চাঁদ। ম্যাক্সিম গোর্কির মা উপন্যাসটা হাতে নিয়ে ছাদে উঠে এলাম। চারদিকে জোছনায় প্লাবিত হয়ে আছে। নিস্তব্ধ রাত, হালকা বাতাস, আর মৃদু পাতার খসখস শব্দ—সবকিছু মিলিয়ে এক অপার্থিব অনুভূতি।


চাঁদের আলো ছড়িয়ে পড়েছে ছাদের রেলিং ধরে থাকা মানিপ্ল্যান্টের পাতায়। বাতাসের দোলায় পাতাগুলো যেন রূপালি আভায় জ্বলজ্বল করছে। আমি বইয়ের পাতায় চোখ রাখি, কিন্তু মনে হয়, প্রকৃতি আজ গল্পের চেয়েও বেশি জীবন্ত। প্রতিটি শব্দ, প্রতিটি বাক্য যেন এই রাতের সঙ্গে একাত্ম হয়ে যাচ্ছে।


এক কাপ ধোঁয়া ওঠা কফি হাতে নিয়ে বসি ছাদের এক কোণে। দূরে কোথাও কুকুরের হালকা ডাক শোনা যাচ্ছে, মাঝে মাঝে কোনো রাতজাগা পাখির ডানার শব্দ বাতাসে মিশে যাচ্ছে। জোছনার আলোয় নিজের ছায়াটার দিকে তাকাই, মনে হয়, আমিও কি এক টুকরো গল্প হয়ে গেছি এই রাতের?


বইয়ের পাতা উল্টাই, কিন্তু চোখ বারবার আকাশের দিকে চলে যায়। হয়তো চাঁদও আজ কিছু বলতে চায়, হয়তো এই রাতও কোনো গল্প বুনছে—যে গল্পের নাম ‘অবাক করা নিস্তব্ধতা’, যেখানে চাঁদ, জোছনা, হালকা বাতাস আর একাকী আমি এক অদৃশ্য সুতোয় বাঁধা পড়ে আছি...

Saturday, March 8, 2025

অন্ধকার অরণ্য

 


২রা রমাদান-২০২৫। মাগরিবের নামাজপড়ে বেরিয়ে এলাম রাস্তায়। সারাদিন রোজার ক্লান্তিতে, ইফতারের পর পুরো শরীর ঘেমে আসছে। আবাসিক থেকে বেড়িয়ে এলাম খোলা মাঠে।

গোধূলির লালচে আলো ধীরে-ধীরে মলিন হয়ে আসছে। পশ্চিমের আকাশ যেন আগুনের মতো জ্বলছে, আর তার নিচে ছড়িয়ে আছে অস্পষ্ট ধোঁয়াশা। ৫০/৬০ একরে পরিত্যক্ত প্লটগুলোর ভেতর আমি একা। চারপাশে ঝোপঝাড়, জঙ্গল আর ভাঙাচোরা কংক্রিটের স্তূপ পড়ে আছে। যেন বহুদিন কেউ এখানে আসেনি। বাতাস ভারী, নিস্তব্ধতা চারপাশে জমাট বেঁধেছে।


হাঁটতে-হাঁটতে আমি একটা নিচু দেয়ালে হেলান দিয়ে বসি। দূরের 'মেঘনা ফ্রেশ সিমেন্ট ফ্যাক্টরি' আর 'ফ্রেশ সিরামিক্সে' -এর চুল্লিগুলোকে এখন ধোঁয়াশার ভেতর ভাসমান দ্বীপের মতো লাগছে। দু’শ মিটার দূরে মেঘনা নদীর একটা ছোট্ট শাখা এঁকেবেঁকে চলে গেছে। যার পানিতে সন্ধ্যার আলো মিশে এক অদ্ভুত গাঢ় রঙ নিয়েছে।


পাশেই অনেক বড়সড় একটি রেন্ডি গাছ। বিশালাকার কান্ড নিয়ে, মাটির দিকে ঝুলিয়ে আছে। লতাপাতায় ভরপুর। তার নিচে জমাট বেঁধেছে গাঢ় অন্ধকার। থেকে-থেকে পুরো মাঠজুড়ে ঝোপঝাড়ের মাঝে বেড়ে উঠেছে বড়ই গাছ।


হঠাৎ ঝোপের ভেতর থেকে একটা চাপা আওয়াজ শোনা গেল। মনে হলো, যেন কেউ নিঃশ্বাস ফেলছে, ভারী আর গভীর একটা নিঃশ্বাস। আমি থমকে গেলাম। বাতাসে একটা পোড়া গন্ধ ভেসে এলো—কেমন যেন ভেজা মাটির গন্ধের সঙ্গে মিশে থাকা পোড়া মাংসের মতো!


আমি উঠে দাঁড়িয়ে সামনে এগিয়ে গেলাম, কিছু দূরে একটা উঁচু টীলা দেখে সেখানে বসার জন্য পা বাড়ালাম। ঠিক তখনই, পিছনের ঝোপ থেকে এক হু হু ডাক উঠল! শেয়াল!


আমি ঘাড় ঘুরিয়ে তাকাতেই চোখ কপালে উঠে গেল। ঝোপের মধ্যে লালচে দৃষ্টির কয়েকটা জোড়া চোখ জ্বলজ্বল করছে। তাদের শরীর পুরোপুরি দেখা যাচ্ছে না, কিন্তু বোঝা যাচ্ছে তারা এগিয়ে আসছে—ধীরে, নিঃশব্দে।


আমার বুক ধড়ফড় করে উঠল। দ্রুত পা চালিয়ে সামনের দিকে এগোতেই ডান পাশের আরেকটা ঝোপ থেকে হঠাৎ কয়েকটা শেয়াল একসঙ্গে চেঁচিয়ে উঠল। তাদের চিৎকারের ভেতর একটা কর্কশ, অস্বাভাবিক কম্পন আছে—এ যেন শেয়ালের ডাক নয়, যেন কোনো বিকৃত আত্মার আর্তনাদ!


আমি দৌড় দিলাম। পায়ের নিচে শুকনো ডালপালা ভেঙে যেতে লাগল, চারপাশে অন্ধকার ঘন হয়ে আসছে। একবার পিছনে তাকাতেই দেখতে পেলাম—শুধু শেয়াল নয়, মানুষের মতো অবয়বের কিছু জিনিস ছায়ার ভেতর দাঁড়িয়ে আছে! তারা কি মানুষ? নাকি অন্য কিছু?


পাগলের মতো ছুটতে লাগলাম, কিন্তু আশেপাশের ঝোপঝাড় থেকে যেন আরও আরও অনেক চিৎকার ভেসে আসছে। পায়ের তলায় শুকনো মাটি ধসে যেতে লাগল, আর আমি হোঁচট খেয়ে পড়ে গেলাম। মাথার ঠিক ওপরে একটা শীতল নিঃশ্বাস অনুভব করলাম।


উঠে দাঁড়ানোর আগেই অনুভব করলাম, পেছন থেকে একটা ঠান্ডা হাত আমার কাঁধে পড়েছে…


নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা

Sunday, September 24, 2023



 পাকুরতলে সোনালি দুপুর

 আমার কৈশোরের দিনগুলোর বিশাল একটা অংশ এখানেই লুকিয়ে আছে। শীতের সকালে খালি পাায়ে ছুটে আসতাম এই পাকুরতলীতে। এসে দেখতাম, পাখিরা কিচিরমিচির রবে পাকুরের ঘুম ভেঙে দিয়েছে। ততক্ষণে পূর্বাকাশ রক্তিম হয়ে উঠেছে। শিশিরভেজা সবুজ ঘাসে সোনালী রোদ হেঁসে উঠেছে। গ্রীষ্মের অলস দুপুরে মা যখন ঘুমোতে বলতো— মায়ের চোখ ফাঁকি দিয়ে ছুটে আসতাম পাকুরতলীতে। পাশ্বের গ্রামের রাখাল ছেলেদের ঘুড়ি উড়া, লুডু, পাইতা আরও নাম না জানা নানান খেলা দেখতাম। দুপুর গড়িয়ে বিকেল কাটিয়ে সবাই যখন বাড়ি ফিরতো, পাকুরতলীতে আনমনা হয়ে কি যেন ভাবতাম। দেখতাম, দূরের পল্লি থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি উড়ে আসছে এই পাকুর গাছে। কিচিরমিচির রবে মাতিয়ে তুলতো পাকুর গাছটা। যেন সারাদিনের কর্মবিবরণী বলে দিচ্ছে পাকুরকে। গোধূলিলগ্নে পূর্বাকাশ যখন রক্তিম হয়ে আসতো, বিস্ময়ভরা চোখে তাকিয়ে দেখতাম— সূর্যের লুকোচুরি। চারদিকে যখন অন্ধকার হয়ে আসতো, খানিক দূরে তাকিয়ে দেখতাম— কে যেন দাঁড়িয়ে আছে। কাছে গিয়ে দেখতাম, সে আমার 'মা'। আমাকেই খুঁজেফিরে এখানেই এসেছে। আজ এই অনুভূতীগুলো এই ইট-পাথরের চার দেয়ালের মাঝে বন্দী হয়ে আছে!

Thursday, September 14, 2023




ঈদুল আযহার রাতের কথা। আমি খুব ক্লান্ত ছিলাম। তাই মশারী টানিয়েই শুয়ে পড়লাম। গরম ছিলো খুব কিন্তু, পাখা ছাড়তে মনে ছিলো না। মশারির ভিতরে দম বন্ধ হয়ে আসার জোগাড়, ঘামে যাকে বলে একেবারে গোসল! ক্লান্তি এত ছিলো যে,মশারি থেকে বের হতে মন চাচ্ছে না, কিন্তু উপায় কী! আগত্যা বের হলাম এবং পাখা ছেড়ে এসে শয়ন করলাম; শান্তি লাগলো এবং আরামের ঘুম হলো। ঘুমের আগে চিন্তা হলো, এই মশারি তো কবরেরই নমুনা! যদি আগে থেকেই আরামের ব্যাবস্থা করে ঢুকতাম, এতো কষ্ট হতো না। তদ্রূপ কবরে যদি আগে থেকেই ব্যাবস্থা না করে যাই তাহলে তো কষ্টের শেষ থাকবে না! মশারি থেকে তো বের হতে পেরেছি, তাই কষ্ট হলেও তা দূর করা গেছে; কিন্তু কবর থেকে তো বের হওয়া যাবে না!


বাইশ/সাত/বাইশ



Tuesday, September 12, 2023

স্বপ্নপোড়ার গন্ধ!

বঙ্গ মার্কেট, ঢাকা


বাইতুল মোকাররমে জুমা পড়ে, মেরাজ ভাইসহ বঙ্গবাজারের দিকে যাচ্ছি। গুগলম্যাপ বেরকরে মেরাজ ভাই বললেন- আযীয ভাই, বঙ্গবাজার একসময় 'হকার্স মার্কেট' ছিলো; সেই থেকে দেশের 'সর্ববৃহৎ পাইকারি কাপড়ের মার্কেট' হয়ে উঠেছিলো। এখানের 'পাইকারি কাপড়' বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলে সেল হতো। রোজার প্রথম ভাগেই ব্যবসায়ীরা গুদাম স্টক করে রাখতেন; যা অন্য সময়ের চেয়ে দ্বিগুণ ছিলো। রকমারি, বাহারি কাপড়ের প্রাণকেন্দ্র ছিলো এটি। ঈদ উপলক্ষে ভীড় লেগেই থাকতো বঙ্গবাজারে। প্রতিদিন  হাজারো ব্যবসায়ী ছুটে আসতো এখানে... মেরাজ ভাইয়ের কথাগুলো শুনছি আর কল্পনায় যেন অবলোকন করছি।

গুলিস্তানের 'সড়ক পাতাল মার্কেট' -এ পৌঁছানোর পর 

মেরাজ ভাই বললেন, পাতাল মার্কেট দিয়ে রাস্তার ওপারে যেতে হবে। আমি অবাক হলাম যে, এমন পিচঢালা কংক্রিটের রাস্তার নীচে কিভাবে শতো শতো দোকান সাজানো হয়েছে!  কৌতুহলী চোখজোড়া নিয়ে পাতালপুরীতে ডুবলাম। নীচে নামার পর মনেহওয়া তো দূরের কথা কল্পনাও হলো না যে, এই মার্কেটের উপরে শতো শতো বাস ও ট্রাক অবিরাম ছুটছে...

গুলিস্তান ফ্লাইওভারের মোড় ঘুরতেই কাপড়পোড়ার ঝাঝাঁলো গন্ধ শুকতে পেলাম। সামনে যতোই এগুচ্ছি গন্ধটা যেন তীব্রতর হয়ে আসছে। সেই সাথে উৎসুক জনতার ভীড়ও বেড়ে যাচ্ছে। মেরাজ ভাই কথা থামিয়ে বললেন, আযীয ভাই! কাপড় পোড়ার গন্ধ পাচ্ছেন? আমিও ঝটপট বলে ফেললুম, হ্যাঁ পাচ্ছি। তবে গন্ধটা যেন কাপড় পোড়ার নয়- থোকা থোকা স্বপ্ন পোড়ার গন্ধ! ইতিমধ্যে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের লাল বিল্ডিংটা চোখেপড়ল। ডানদিকে তাকাতেই- পোড়া টিন ও ইটের স্তূপ দেখতে পেলাম। তিনদিন পূর্বের আগুনে আজও ধোঁয়া উড়ছে! কালো ধোঁয়ায় পাশের বিল্ডিংগুলোও কালো হয়ে গেছে। কাপড় পোড়ার ঝাঝাঁলো ধোঁয়ায় চোখগুলো আলতো জলছে। ঠোঁটের ফাঁকে লুকিয়ে থাকা মুচকি হাসিটা নিমিষেই বিলীন হয়ে গেলো। দু'দিন আগে ব্যবসায়ীদের বুকফাঁটা আর্তনাদ মনে নাড়া দিলো। সাংবাদিকদের সাক্ষাতকারে- 'ভেঙেপড়া অসংখ্য ব্যবসায়ী'র স্মৃতিগুলো, হৃদয়পটে একেরপর এক ভাষতে লাগলো। কালোপ্রতীকে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের শোকপ্রকাশ ও দাবী জানিয়ে কতগুলো ব্যনার সাটাঁনো আছে। পাশেই এনেক্সকো টাওয়ার। শতো শতো উৎসুক জনতা নির্বাক তাকিয়ে আছে। প্রতিটি চোখ যেন শোকাবহ। কতশতো স্বপ্ন আর কতশতো চোখের জল এখানেই হারিয়ে গেছে। ভিতরটা দেখতে চাইলাম; কিন্তু জনস্রোত ডিঙ্গাতে পারলাম না। টিনের বেড়ায় উঁকি দিয়ে ভিতরে তাকালাম- ধ্বংসস্তূপ কাপড় ও টিনের স্তূপ ছাড়া কিছুই পেলাম না। এখনও সেই ধ্বংসাবশেষ  টিলাগুলো থেকে স্বপ্ন পোড়ার কালো ধোঁয়া বেরুচ্ছে আর হাওয়ার সাথে মিশে যাচ্ছে শতো শতো দীর্ঘশ্বাস! 


সাত/এপ্রিল/তেইশ

তাড়াহুড়ো নয়, ধীরস্থির হউন!

বার্ষিক পরীক্ষার দিনগুলো...


বার্ষিক পরিক্ষা চলছে।

মাগরীবের নামাজ পড়ে পড়তে বসেছি। কয়েকপৃষ্ঠা পাতা উল্টানোর পর, মাথায় যেন কিছুই ঢুকছে না। খুব ঘুম ঘুম লাগতেছে। একটু পড়তেছি তো ঝিমুচ্ছি। শরীরটা ঘর্মাক্ত হয়ে উঠেছে। কপালে ঝিরিঝিরি ঘাম জমতেছে। কি পড়তেছি নিজেও বুঝতেছি না। চোখ দু'টো নিজ থেকেই বুজে আসতেছে। ভাবলাম, এশা পর্যন্ত একটু ঘুমিয়ে নেয়া যাক্। এশার নামাজ পড়েই পড়তে বসবো। এলার্ম-ঘড়িটা কানের কাছে নিয়ে শুয়ে পড়লাম।


...ক্রিংক্রিংক্রিং

তাড়াহুড়ো করে এশার নামাজ পড়ে, পড়ার টেবিলে আসলাম। যারপরনাই আগ্রহ ও মনোযোগ দিয়ে পড়তেছি। সবেমাত্র দু'একপৃষ্ঠা পড়েছি কি-না- ঝিমুনি যেন ঝাপটে ধরতে চাচ্ছে। লম্বা একটা হাই তুলে- টেবিলের পার্শ্বে রাখা মামপটের পানিগুলো, কয়েক ঢোকে গিলে নিলাম। পাঞ্জাবীর হাতা মুড়িয়ে বইয়ের পাতা উল্টাচ্ছি। বইয়ের কালো হরফগুলো ঝাপসা লাগতেছে। চশমার গ্লাসগুলো মুছে নিয়ে নবোদ্দমে বইয়ের পাতা উল্টাচ্ছি। দু'পৃষ্ঠা পড়লাম কি-না... (!)

বইয়ের পাতাগুলো অস্পষ্ট লাগছে। শরীরটা ক্রমশঃ ছাড়িয়ে দিচ্ছে। চক্ষুদ্বয় বুজিয়ে আসছে। পুরো শরীর ঘেমে যাচ্ছে। 

একটু নড়েচড়ে বসলাম। কপাল ভাঁজ করে পূর্ণোদ্দমে পড়ার চেষ্টা করছি কিন্তু চোখদুটো আপনার থেকেই বুজে আসতেছে। পূর্বের তুলনায় এবারের ঘুমটা প্রবল হয়ে উঠছে। ঝিমুনি যেন তীব্রতর হয়ে আসছে। শরীরের সর্বশক্তি যেন ক্ষয়ে গেছে। চোখ মেলানোর শক্তিটাও যেন লোপ পেয়েছে। 

খোলা বইয়ের উপর চশমাটা রেখে, ইকবালকে বললাম-

বিছানায় গেলাম। ১১ টায় ডেকে দিস্।

এলার্ম-ঘড়িটা কানের কাছে নিয়ে শুয়ে পড়লাম।


ঘন্টা দেড়েক ঘুমানোর পর...

কাত পাল্টাতে গিয়ে- নাফিস ও নেহালের পড়ার আওয়াজে লাফিয়ে উঠলাম। গায়ে জড়িয়ে নেয়া চাঁদরটা ছুড়েমেরে- ওয়াশরুমে গেলাম। চোখেমুখে পানি দিয়ে পড়ার টেবিলে আসলাম। চশমাটা চোখে নিয়ে- মামপটের অবশিষ্ট পানিটুকু চুমুকেই শেষ করলাম।

এবার বইয়ের পাতা উল্টিয়ে নবোদ্যমে-পড়তে বসলাম।

রাত ১১টা, ১২টা, ১টা, ২টা...

পড়তেছি ,পড়তেছি আর পড়তেছি। একটু ঝিমুচ্ছি তো পানি গিলতেছি আবার পড়তেছি। কখনোবা বইটা হাতে নিয়ে পায়চারী করতেছি আর পড়তেছি। ঘন্টার কাঁটা যখন ৪ এর কোটা ছুঁয়েছে; মাথায় যেন নতুন করে কিছুই ঢুকছে না। বইয়ের পাতা উল্টানোর মতো শক্তিও পাচ্ছি না। ভীষণ ক্লান্তিনুভাব করতে লাগলাম। বইটা হাতে নিয়ে বিছানায় গেলাম। শুয়ে শুয়ে কয়েক লাইন পড়লাম কি-না... (!)

ফজরের আজানে চোখ মেললাম। চশমাটা চোখে আর বইটা বুকের উপর পড়ে আছে। ধড়ফড়িয়ে উঠে বসলাম। ভাগ্যিস, কাত পাল্টাইনি আর চশমাটারও কিছু হয় নি! 

ফজরের নামাজের পর...

এককাপ চা সাথে নিয়ে, পাঞ্জাবীর হাতা মুড়িয়ে পড়তে বসলাম। বেশ মনোযোগী মন নিয়ে পড়তেছি। আধাপৃষ্ঠা পড়েছি কি-না(!) রাতের ন্যায় ঘুম ঘুম ভাব লাগতেছে।  চোখ যেন মেলতেই পারছি না। শরীরটা যেন মুষড়ে যাচ্ছে। ঝিমুনী যেন প্রবল হয়ে আসছে। অল্পক্ষণের জন্য বইয়ের উপর মাথাটা ঠেকিয়ে দিলাম। 

তা র প র...

কি এক শব্দে মাথাটা তুলতেই দেখি- ওমা! ৭:৩০ পেরিয়ে গেছে! ৮:৩০-এ পরিক্ষা। পা দু'টো ঝিন ধরে আছে। চা-টা ঠাণ্ডা শরবত হয়ে গেছে! সকালের খাবার প্লেটে বেড়ে দিয়েছে। দু'দিন থেকে গোসল না করায়, মাথাটা ভাড় হয়ে আছে। এদিকে আরও ১৫/২০ পৃষ্ঠা পড়া বাকি আছে! এই অল্পসময়ে কী করবো ভেবে পাচ্ছি না! রাস্তায় আবার জ্যাম- এখন বের না হলে যথাসময়ে হলে ঢুকতে পারবো না।

কোনভাবে ওয়াশরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে, বইটা বিছানায় মেলিয়ে রেখে, পড়তেছি আর জামা পাল্টাচ্ছি। আসাদ ভাই বললেন, খাবার খাবেন না? না খেয়েই যাবেন?

: সময় নেই। ৮ পেরিয়ে গেছে।-বলেই বেরিয়ে পড়লাম। রাস্তা পার হতে যাবো- ট্রাফিক মহোদয় বিশাল বড় সিগন্যাল টেনে দিলো! মাননীয় ট্রাফিক মামার ইশারায় খানিক দাঁড়িয়ে থেকে; হাতঘড়িটাতে চোখ পড়তেই দেখি- ৮:১৫ বেজে গেছে! মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ল! কোনমতে রাস্তাটা পেরিয়েই ৬০ কি.মি বেগে ছুটতে লাগলাম! পরিক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে দেখি ৮:৪৪ বেজে গেছে! বুকটা দুরুদুরু কাঁপছে। ৬ তালা ভবনের ৫ম তলায় আমাদের পরিক্ষার হল্। সিঁড়ি বেয়ে উঠতেছি আর কি যেন ভাবতেছি।


পরিক্ষার হলে...

সচ্ছ কাচের দরজায় ধাক্কা দিতেই শতখানেক জোড়া জোড়া চোখ আমাকে ফোকাস করলো। পিনপতন নীরবতা। সবাই উত্তরপত্র ফিলআপ করতেছে। সীটে যাওয়ার আগেই হল্ সুপার ছুটে এলো। কপাল ভাঁজ করে, ফিসফিসিয়ে বললো- তুমি কি পরিক্ষার্থী?

: জ্বী স্যার। 

বলে, এডমিট কার্ডটা শো করলাম। কয়েকনজর তাকিয়ে চোখজোড়া বড়সড় করে বললো- 

ক'টা বাজে! দেরি কেন? 

: স্যার বুঝতে পারিনি। ঘুমিয়ে পড়েছিলুম।

: দাঁড়িয়ে থাকো এখানে ২০ মিনিট।

এরপর বিড়বিড়িয়ে কিছু বলে চলে গেলেন। উপায়ন্তর না পেয়ে, কিংকর্তব্যবিমুঢ় হয়ে, দাঁড়িয়ে রইলাম। প্রায় দেড়শতাধিক পরিক্ষার্থীর সামনে দাঁড়িয়ে আছি। সকলেই নিজ লেখনীতে ব্যাস্ত। মাথাতুলে আমার দিকে তাকানোর মতো কারো মুড নেই। খুব অসহ্য লাগতেছে। আমার পার্শ্বের সীটে আসীন- মাহবুব ভাই হাত উঁচিয়ে কি যেন বোঝাতে চাচ্ছে, বুঝতে পারছি না। ২০ মিনিট পেরিয়ে গেছে। হলসুপার প্রশ্নসমেত উত্তরপত্র দিয়ে বললেন- আগামীকাল থেকে দেরি হলে স্বাক্ষর করতে দেয়া হবে না। অনিচ্ছা সত্ত্বেও মুচকি হাসি টেনে, মাথা দুলিয়ে, সম্মতি দিয়ে সীটে আসলাম।


রোল ও নিবন্ধন নম্বর লেখার পর...

প্রশ্নপত্রে চোখ পড়তেই মনটা ভরে গেলো- প্রথম প্রশ্ন দু'টি কমন পরেছে। বাকিগুলো চিরুনী অভিযান দিয়েও মনে করতে পারছি না। প্রথম দু'টির উত্তর লেখা শুরু করলাম। অর্ধেক লিখেছি হয়তো। চোখদুটো যেন চিনচিন করছে। প্রতিটা অক্ষর ডাবল-ডাবল লাগছে। কলমটা যেন হাত থেকে খশে যাচ্ছে। চোখদুটো বড় করে, কপালে ভাঁজ টেনে- লেখার চেষ্টা করেও ঝিমিয়ে পড়তেছি। মাহবুব ভাই ফিসফিসিয়ে বললো, আহমেদ ভাই! হল্ সুপার আপনাকে ফলো করতেছে। ঘুমায়েন না। সম্বিৎ ফিরে পেয়ে, চোখদুটো ডলে নিলাম। উত্তরপত্রে তাকিয়ে দেখি, একি! উপর-নীচ বরাবর খাড়া-খাড়া কলমের টান! ডানেবামে আরোও কয়েকটা কলমের আঁচড়! হল্ সুপার এতোক্ষণে কাছে এসেছে। আমার খাতাটি দেখে চোখদুটো কপালে তুলে বললো, এসব কি? আমি কিছুই বলতে পারলাম না। উনি চলে যাওয়ার পর বুঝতে পারলাম। ঘুমের তীব্র ঝিমুনিতে এমনটা হয়েছে। ভাগ্যিস, সাদা খালি পাতাটায় এমন হয়েছে। পাতাটা খুলতে যাবো, মাইক্রোফোনে ভেষে এলো- এখন সময় ১১:৩০...আর মাত্র আধাঘণ্টা সময় অবশিষ্ট আছে...

আমি যেন পিলে চমকে গেলাম। তাড়াহুড়ো করে যা যা মনে আসে লিখতে লাগলাম। যতদূর মনে আছে, প্রথম প্রশ্ন দু'টো পুরোপুরি কমপ্লিট করেছি। তৃতীয় প্রশ্নের উত্তর লিখতে যাবো, হল্ সুপার আমার খাতাটি টেনে নিয়ে গেছে।


হল্ থেকে বেরিয়ে আসার পর...

মাহবুব, জাবের আর আমার বরাবর পিছনের সীটে বসা নুরুল ইসলাম ভাই বললেন- আহমেদ ভাই, আপনার শরীর ঠিক আছে তো! নতুবা আজ এক্সাম হলে এতোটা ঘুম পেলো আপনার! আবার সবার শেষে হলে ঢুকলেন। পরিক্ষা কেমন হলো আপনার? সকলেই অবাক চোখে তাকিয়ে আছে। 

আমি পুরো কাহিনিটা খুলে বললে, তারা হো হো করে হেসে উঠলো। জাবের ভাই বললেন, তারও নাকি এমনটা হয়েছে কয়েকবার। মাহবুব ও নুরু ভাইয়েরও নাকি এমন হয়েছে এখন আর অনিয়ম করে না। ওদের বিদায় দেয়ার পর, রাস্তা পার হলাম। খিদা, তৃষ্ণা আর ঘুমে যেন ভেঙে পরে যাচ্ছি।

বুঝলাম- গত সন্ধ্যা, রাত, সকাল ও সকাল গড়িয়ে দুপুর অব্দি, কিছু না খেয়ে- অনাহারে থাকায় শরীরে কোনরকম বল্ পাচ্ছি না। পাশাপাশি সারাটা রাত অনিয়মে কাটানোর ফলে- ঘুমার অসহনীয় চাপ কেটে উঠতে পারছি না।


আটাশ/দুই/তেইশ


Ahmed Aziz 's diary 

-থেকে সংগ্রহীত

জনপ্রিয় আর্টিকেলগুলো দেখুন...

চড়ুইভাতি

  ফেলে আসা কৈশোরের দিনগুলোতে... তখন আমি মাদারীপুরে অধ্যায়নরত ছিলাম। ইংরেজি ২০১৭/১৮ খ্রিস্টাব্দ হবে।  প্রায় ছ'সাতমাস পর গ্রামে গেলাম। আমা...

জনপ্রিয় কলামগুলো দেখুন...